
আসসালামু আলাইকুম, কেমন আছেন আপনি? ক্রিপ্টোকারেন্সি এখন বেশ জনপ্রিয়, আর Binance হলো ক্রিপ্টোকারেন্সি কেনাবেচার জন্য সবচেয়ে বড় প্ল্যাটফর্মগুলোর মধ্যে অন্যতম।
আপনি যদি Binance থেকে ইনকাম করতে চান, তাহলে আজকের এই ব্লগ পোস্টটি আপনার জন্য। এখানে Binance থেকে ইনকাম করার বিভিন্ন উপায় নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হবে। তাহলে চলুন, শুরু করা যাক!
Binance থেকে ইনকাম করার বিভিন্ন উপায়
Binance এ বিভিন্ন উপায়ে ইনকাম করা যায়, কিছু উপায়ে রিস্ক আছে আবার কিছু উপায় বেশ সহজ। আপনার জন্য যেটা সুবিধা, সেই অনুযায়ী আপনি ইনকাম করতে পারবেন। নিচে কয়েকটি জনপ্রিয় উপায় নিয়ে আলোচনা করা হলো:
Trading করে ইনকাম
ট্রেডিং মানে হলো কেনাবেচা করা। Binance প্ল্যাটফর্মে আপনি বিভিন্ন ক্রিপ্টোকারেন্সি যেমন বিটকয়েন (Bitcoin), ইথেরিয়াম (Ethereum) ইত্যাদি কম দামে কিনে বেশি দামে বিক্রি করে লাভ করতে পারেন।
- স্পট ট্রেডিং (Spot Trading): স্পট ট্রেডিং হলো সাধারণভাবে কারেন্সি কেনাবেচা করা। যখন দাম কম থাকে তখন কিনে দাম বাড়লে বিক্রি করে দেওয়া। Binance এর স্পট মার্কেট এ আপনি এই সুযোগটি নিতে পারেন।
- ফিউচার ট্রেডিং (Futures Trading): ফিউচার ট্রেডিং একটু জটিল। এখানে আপনি ভবিষ্যতে কোনো ক্রিপ্টোর দাম কেমন হবে, তা নিয়ে বাজি ধরেন। যদি আপনার ধারণা সঠিক হয়, তাহলে আপনি লাভ করতে পারবেন। তবে এটা অনেক ঝুঁকিপূর্ণ। Binance এর ফিউচার মার্কেট এ ট্রেড করার সুযোগ রয়েছে।
অবশ্য ফিউচার ট্রেডিং করতে আমি তোমাদের উৎসাহিত করবো না। কারণ প্রথমত তুমি যদি মুসলীম হয়ে থাকো , তাহলে এককথায় ফিউচার ট্রেডিং তোমার জন্য হারাম। আর দ্বীতিয়ত এটি এক প্রকার ট্র্যাপ এর মতো। তাই তোমাদের জন্য সবচেয়ে নিরাপদ হবে স্পট ট্রেডিং। যেখানে তোমার কাজ হচ্ছে কারেন্সি কম দামে কিনে , পরবর্তীতে দাম বাড়লে বিক্রি করে দেওয়া।
Binance Earn থেকে ইনকাম
Binance Earn হলো এমন একটি প্ল্যাটফর্ম, যেখানে আপনি আপনার ক্রিপ্টোকারেন্সি জমা রেখে সুদ পেতে পারেন। এটা অনেকটা ব্যাংকে টাকা রাখলে যেমন সুদ পাওয়া যায়, তেমনই।
- ফ্লেক্সিবল সেভিংস (Flexible Savings): এখানে আপনি আপনার ক্রিপ্টোকারেন্সি জমা রাখতে পারবেন এবং যখন ইচ্ছা তুলতে পারবেন। আপনি কয়েন জমা রেখে দৈনিক সামান্য পরিমাণে ইন্টারেস্ট নিতে পারবেন। এটি তাদের জন্য ভালো, যারা ক্রিপ্টোকারেন্সি ব্যবহার করতে চান কিন্তু কোনো ঝুঁকি নিতে চান না।
- Locked Staking: এখানে আপনাকে নির্দিষ্ট সময়ের জন্য আপনার ক্রিপ্টোকারেন্সি লক করে রাখতে হবে। সময় শেষ হওয়ার আগে আপনি এটি তুলতে পারবেন না। তবে ফ্লেক্সিবল সেভিংসের চেয়ে এখানে সুদের হার বেশি। Locked Staking-এ বেশি রিটার্ন পাওয়ার সুযোগ রয়েছে।
- লঞ্চপুল (Launchpool): লঞ্চপুল হলো নতুন প্রজেক্টের ক্রিপ্টোকারেন্সি ফার্ম করার একটি উপায়। এখানে আপনি BNB (বাইনান্স কয়েন) বা FDUSD স্টেক করে নতুন কয়েন পেতে পারেন।
বাইনান্স রিওয়ার্ডস
বন্ধুরা বর্তমানে তুমি চাইলে বাইনান্স এ ফ্রিতেই সহজ কিছু টাস্ক পূরণ এর মাধ্যমে ইনকাম করতে পারো। বাইনান্স বর্তমানে তার ইউজারদের নিয়মিত পোস্ট রাইটিং এর জন্য অর্থ দিচ্ছে। তুমি যদি তাদের ক্রাইটেরিয়া পূরণ করতে পারো। তাহলে তোমার এখান থেকে ভালো পরিমাণে ইনকাম করার সুযোগ রয়েছে। এছাড়া ও বাইনান্স রেড প্যাকেট এর মাধ্যমে ও তোমার ইনকাম এর সুযোগ রয়েছে।
বাইনান্স রেফারাল প্রোগ্রাম
রেফারেল প্রোগ্রাম হলো Binance থেকে ইনকাম করার অন্যতম সহজ একটি উপায়।
- এখানে আপনি আপনার বন্ধুদের বা পরিচিতদের Binance এ যোগ দেওয়ার জন্য একটি রেফারেল লিঙ্ক দিতে পারেন।
- যখন তারা আপনার লিঙ্কের মাধ্যমে অ্যাকাউন্ট খুলবে এবং ট্রেড করবে, তখন আপনি তাদের ট্রেড ফি থেকে ১০% থেকে ৪০% পর্যন্ত কমিশন পাবেন।
- এটি একটি প্যাসিভ ইনকাম সোর্স হিসেবে কাজ করে এবং নতুনদের জন্য একটি সহজ উপায়।
তোমার যদি কোন ইউটিউব চ্যানেল থেকে থাকে তাহলে কিভাবে বাইনান্স একাউন্ট খুলতে হয় এই সম্পর্কৃত একটি ভিডিও তৈরি করে রেখে দাও । সাথে ডেসক্রিপশন বক্সে তোমার রেফারাল লিঙ্ক দিয়ে দাও ।
পিটুপি (P2P) ট্রেডিং ও আর্বিট্রেজ
পিটুপি (P2P) ট্রেডিং হলো সরাসরি অন্য ব্যবহারকারীর সাথে ক্রিপ্টোকারেন্সি কেনাবেচা করা।
- Binance P2P প্ল্যাটফর্মে আপনি কম দামে ক্রিপ্টো কিনে বেশি দামে বিক্রি করে আয় করতে পারেন।
- P2P ট্রেডিং এ আপনি বিভিন্ন পেমেন্ট মেথড ব্যবহার করতে পারবেন।
আর্বিট্রেজ (Arbitrage) হলো অন্য এক্সচেঞ্জ থেকে কম দামে ক্রিপ্টো কিনে Binance এ বেশি দামে বিক্রি করা। তবে এক্ষেত্রে সতর্কতা ও দক্ষতা প্রয়োজন।
Binance থেকে ইনকাম করার জন্য কিছু গুরুত্বপূর্ণ টিপস
| ১.Binance এ ইনকাম করার জন্য আপনার সময়, দক্ষতা ও সতর্কতা প্রয়োজন। ২.নতুন কোনো কয়েনে ট্রেড করার আগে সেই কয়েন সম্পর্কে ভালোভাবে জেনে নেওয়া উচিত। ৩.Binance এর অফিশিয়াল ওয়েবসাইট এবং অ্যাপ ব্যবহার করুন। অন্য কোনো মাধ্যমে লগইন করা থেকে বিরত থাকুন। ৪.Binance এর অফিশিয়াল ওয়েবসাইট এবং অ্যাপ ব্যবহার করুন। অন্য কোনো মাধ্যমে লগইন করা থেকে বিরত থাকুন। ৫.ভালোভাবে মার্কেট রিসার্চ করে তার পর কয়েন কিনুন। সকল প্রকার কয়েন কেনা থেকে বিরত থাকাই ভালো। |
Binance ব্যবহার করার নিয়ম
Binance ব্যবহার করা বেশ সহজ। নতুন ব্যবহারকারীদের জন্য নিচে একটি গাইড দেওয়া হলো:
- অ্যাকাউন্ট তৈরি: প্রথমে বাইনান্স এর ওয়েবসাইটে অথবা অ্যাপে গিয়ে একটি অ্যাকাউন্ট তৈরি করতে হবে। আপনার ইমেল আইডি ও অন্যান্য প্রয়োজনীয় তথ্য দিয়ে নিবন্ধন করতে হবে।
- KYC ভেরিফিকেশন: অ্যাকাউন্ট তৈরি করার পর KYC (Know Your Customer) ভেরিফিকেশন করতে হবে। এর জন্য আপনার জাতীয় পরিচয়পত্র, পাসপোর্ট অথবা ড্রাইভিং লাইসেন্স এর স্ক্যান কপি এবং অন্যান্য প্রয়োজনীয় তথ্য জমা দিতে হতে পারে।
- সিকিউরিটি সেটিংস: আপনার অ্যাকাউন্টের সুরক্ষার জন্য টু-ফ্যাক্টর অথেনটিকেশন (2FA) চালু করুন।
- টাকা জমা দেওয়া: Binance অ্যাকাউন্টে টাকা জমা দেওয়ার জন্য আপনি ব্যাংক ট্রান্সফার, ক্রেডিট/ডেবিট কার্ড অথবা ক্রিপ্টোকারেন্সি ব্যবহার করতে পারেন।
- ট্রেডিং শুরু করা: টাকা জমা দেওয়ার পর আপনি ট্রেডিং শুরু করতে পারেন। স্পট ট্রেডিং, ফিউচার ট্রেডিং অথবা Binance Earn-এর মাধ্যমে আপনি আপনার পছন্দসই উপায়ে ইনকাম করতে পারেন।
- টাকা তোলা: বাংলাদেশ থেকে টাকা তোলার জন্য সবচেয়ে সহজ মাধ্যম হচ্ছে বিকাশ , নগদ অথবা অন্য মোবাইল ব্যাংকিং মাধ্যম গুলো।
Comments (1)
Rakibsays:
December 14, 2025 at 4:15 pmস্টক ট্রেডিং আর ফিউচার ট্রেডিং এর মধ্যে পার্থক্য কি ?