
বন্ধুরা আজকে আমরা আলোচনা করবো বিপরীত হিসাব বা কন্ট্রা হিসাব নিয়ে। আমি চেষ্টা করব খুব সহজ ভাষায় তোমাদের কে বুঝানোর জন্য।
সাধারণত বিরপীত হিসাব বা কন্টা হিসাব হলো এমন এক ধরণের হিসাব যা , একটি হিসাবের স্বাভাবিক জের কে হ্রাস করে। বিপরীত হিসাবের আরো একটি নাম হলো প্রতি হিসাব। চলো আরো সহজ ভাষায় বিষয়টি কে বুঝা যাক।
বিপরীত হিসাব
ধরো , তুমি তোমার ব্যবসায়ের জন্য একটি ল্যাপটপ ১৫০০০ টাকা দিয়ে কিনেছিলে। এখন এক বছর ব্যবহার করার পর তুমি তা ১০০০০ টাকায় বিক্রি করে দিলে। অথাৎ ৫০০০ টাকা কমে বিক্রি করেছো , এই ৫০০০ টাকাকে আমরা অবচয় বা ব্যবহার জনিত ক্ষয় বলতে পারি। যা আমার সম্পদের মুল্যকে কমিয়ে দিয়েছে। এক্ষেত্রে আমরা পুঞ্জিভুত অবচয়কে বিপরীত হিসাব বা কন্ট্রা হিসাব বলতে পারি।
এখন চলো আমরা বিপরীত সম্পদ , বিপরীদ দায় , বিপরীত আয় ও ব্যয় এবং বিপরীত মালিকানাস্বত্ব সম্পর্কে জেনে আসি।
বিপরীত সম্পদ কি ?
সাধারণত যেসব হিসাব এর কারণে সম্পদের পরিমাণ কমে যায় , সেইসব হিসাব কে বিপরীত সম্পদ বা প্রতি সম্পদ বলে। যেমন : পুঞ্জিভূত অবচয় , অবচয় সঞ্চিতি, পাপ্য বিল , পুঞ্জিভূত অবলোপন , কুঋণ সঞ্চিতি ও বাট্টা সঞ্চিতি।
| সম্পদ | বিপরীত সম্পদ |
|---|---|
| সুনাম | পুঞ্জীভূত অবলোপন |
| পাপ্য হিসাব | কুঋণ সঞ্চিতি |
| পাপ্য হিসাব | দেনাদারের বাট্টা সঞ্চিতি |
| কয়লার খনি | পুঞ্জীভূত অবলোপন |
| যন্ত্রপাতি | পুঞ্জীভূত অবলোপন |
বিপরীত দায় কি ?
সাধারণত যেসব হিসাব দায়ের পরিমাণ কমিয়ে দেয় , তাদের কে বিপরীত দায় হিসাব বলে। যেমন : ঋণপত্র আমাদের জন্য একটি দায় , এটি দায়ের পরিমাণ বৃদ্ধি করে। অপর দিকে ঋণপত্রের অবহার দায়ের পরিমাণ কমিয়ে দেয়। তাই ঋণ পত্রের অবহার একটি বিপরীত দায় হিসাব। চলো আমরা কিছু দায় এবং তাদরে বিপরীত দায় গলো দেখে আসি।
| দায় | বিপরীত দায় |
|---|---|
| পাওনাদার | পাওনাদারের বাট্টা সঞ্চিতি |
| প্রদেয় বিল | প্রদেয় বিলের বাট্টা সঞ্চিতি |
বিপরীত আয় হিসাব কি ?
বন্ধুরা যে সব হিসাবের কারণে , সাধারণত আমাদের আয়ের পরিমাণ কমে যায় তাদের কে বিপরীত আয় হিসাব অথবা প্রতি আয় হিসাব বলে। ধরো , তুমি কারো কাছে ১০০ টি সার্ট বিক্রি করেছো , কয়েকদিন পর সেই ব্যক্তি তোমাকে ১০ টি সার্ট ফেরত দিলো। যার দরুন এখন তোমার ১০ টি সার্ট থেকে প্রাপ্ত আয় থেকে তুমি বঞ্চিত হচ্ছো। অথাৎ বিক্রয় ফেরত এর কারণে তোমার আয়ের পরিমাণ কমে যাচ্ছে।
| আয় | বিপরীত আয় |
|---|---|
| বিক্রয় | বিক্রয় ফেরত / বহিঃ ফেরত |
| বিক্রয় | বিক্রয়ের অপর কারবারি বাট্টা |
বিপরীত ব্যয় হিসাব
যেসব হিসাব কারবারে ব্যয় এর পরিমাণ কমিয়ে দেয় তাদের কে ব্যয় হিসাব বলে। যেমন : ক্রয় এর ফলে আমাদের প্রতিষ্ঠানে ব্যয় এর পরিমাণ বেড়ে যায়। একি ভাবে ক্রয় বাট্টা এবং ক্রয় ফেরত আমাদের প্রতিষ্ঠানে ব্যয় এর পরিমাণ কমিয়ে দেয় । যার কারণে ক্রয় বাট্টা ও ক্রয় ফেরত কে বিপরীত ব্যয় হিসাব বলে।
বিপরীত মালিকানাস্বত্ব হিসাব কাকে বলে ?
বন্ধুরা সাধারণত যেসব হিসাব এর কারণে আমাদের প্রতিষ্ঠানে মালিকানাস্বত্বের পরিমাণ হ্রাস পায় , তাদের কে বিপরীত মালিকানাস্বত্ব হিসাব বলে। যেমন : প্রতিষ্ঠান থেকে নগদ অর্থ অথবা পন্য উত্তোলন এর ফলে , প্রতিষ্ঠানের মালিকানাস্বত্ব হ্রাস পায়। অন্য দিকে তুমি ট্রেজারি স্টক এর কথা চিন্তা করতে পারো। সাধারণত কোম্পানি যদি নিজেদের শেয়ার নিজেরাই ক্রয় করে , তখন তাকে ট্রেজারি স্টক বলে । এর ফলে প্রতিষ্ঠানে শেয়ার মূলধন এর পরিমাণ কমে যায়।
| মালিকানাস্বত্ব | বিপরীত মালিকানাস্বত্ব |
|---|---|
| মূলধন | উত্তোলন |
| শেয়ার মূলধন | ট্রেজারি স্টক / শেয়ার অবহার |
| সংরক্ষিত মুনাফা | লভ্যাংশ |
শেষ কথা
বন্ধুরা আশা করি আজকের আর্টিকেল টি তোমাদের সামান্য হলেও কাজে আসবে। তোমাদের যেকোন সমস্যা অথবা কোথায় ও বুঝতে অসুবিধা হলে প্রশ্ন করতে পারো।
জিজ্ঞাসা
বিপরীত হিসাব সাধারণ প্রতি হিসাব বা কন্ট্রা হিসাব নামে পরিচিত।
বিপরীত আয় হিসাব গুলো হলো : বিক্রয় ফেরত ও বিক্রয় বাট্টা
না , বিপরীত দাখিলা ও বিপরীত হিসাব এক নয়। বিপরীত দাখিলা সাধারণত বছরের শেষে করা দাখিলা গুলোকে পরবর্তী বছরের শুরুতে এন্ট্রি করা হয়ে থাকে।
সাধারণত কোম্পানি যদি , নিজেদের শেয়ার নিজেরাই ক্রয় করে থাকে তবে তাকে ট্রেজারি স্টক বলে।
Leave a Reply